গবেষণা ও প্রকাশনার পরিভাষা: গবেষকদের জন্য প্রয়োজনীয় শব্দভাণ্ডার
গবেষণা প্রবন্ধ লেখা ও প্রকাশের ক্ষেত্রে কিছু গুরুত্বপূর্ণ পরিভাষা ব্যবহৃত হয়, যা গবেষকদের অবশ্যই জানা উচিত। সঠিকভাবে একটি গবেষণাপত্র প্রস্তুত ও আন্তর্জাতিক জার্নালে প্রকাশের জন্য এসব পরিভাষার যথাযথ বোঝাপড়া অপরিহার্য।
গবেষণার মূল বিষয় সংক্ষেপে উপস্থাপন করা হয় শিরোনামে। এটি হতে হবে সংক্ষিপ্ত, আকর্ষণীয়, তথ্যবহুল এবং গবেষণার প্রতিপাদ্যের সঙ্গে সুসঙ্গত, যেন পাঠকের আগ্রহ সৃষ্টি হয়।
গবেষণার উদ্দেশ্য, পদ্ধতি, প্রধান ফলাফল ও উপসংহার সংক্ষেপে উপস্থাপিত হয় এখানে। এটি সাধারণত ১৫০-৩০০ শব্দের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকে এবং গবেষণার সারমর্ম তুলে ধরে।
গবেষণার মূল প্রতিপাদ্য বোঝাতে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ শব্দ বা শব্দগুচ্ছ ব্যবহৃত হয়, যা সার্চ ইঞ্জিন ও গবেষণা ডাটাবেসে গবেষণাপত্র খুঁজে পেতে সাহায্য করে।
গবেষণার প্রেক্ষাপট, পূর্ববর্তী গবেষণার সংক্ষিপ্ত পর্যালোচনা, গবেষণার প্রয়োজনীয়তা ও উদ্দেশ্য এখানে ব্যাখ্যা করা হয়।
পূর্ববর্তী গবেষণাগুলোর সংক্ষিপ্ত পর্যালোচনা করা হয় এখানে। এতে গবেষণার ফাঁক (Research Gap) চিহ্নিত করে নতুন গবেষণার যৌক্তিকতা ব্যাখ্যা করা হয়।
গবেষণায় ব্যবহৃত উপকরণ, গবেষণার নকশা, ডেটা সংগ্রহ ও বিশ্লেষণের পদ্ধতি ইত্যাদি এখানে বিস্তারিতভাবে উল্লেখ করা হয়।
গবেষণার প্রধান তথ্য ও বিশ্লেষণ পরিসংখ্যান, টেবিল ও গ্রাফের মাধ্যমে উপস্থাপন করা হয়।
গবেষণা ফলাফলের ব্যাখ্যা, পূর্ববর্তী গবেষণার সাথে তুলনা, সীমাবদ্ধতা ও ভবিষ্যৎ গবেষণার সম্ভাবনা এখানে বিশ্লেষণ করা হয়।
গবেষণার সারসংক্ষেপ, প্রধান ফলাফল ও ভবিষ্যৎ গবেষণার সুপারিশ এখানে উল্লেখ করা হয়।
গবেষণায় ব্যবহৃত সমস্ত উৎস নির্দিষ্ট Citation শৈলীতে (যেমন APA, MLA, IEEE) উল্লেখ করা হয়, যা গবেষণার গ্রহণযোগ্যতা নিশ্চিত করে।
গবেষণার মান ও নির্ভরযোগ্যতা নিশ্চিত করতে বিশেষজ্ঞদের দ্বারা গবেষণাপত্র পর্যালোচনা করা হয়।
একটি জার্নালের মান নির্ধারণের পরিমাপক, যা সেই জার্নালে প্রকাশিত গবেষণার Citation সংখ্যার ওপর ভিত্তি করে নির্ধারিত হয়।
একজন গবেষকের প্রকাশনা সংখ্যা ও Citation-এর ভিত্তিতে তার গবেষণার প্রভাব নির্ধারণের একটি সূচক।
প্রত্যেক গবেষণাপত্রের জন্য নির্দিষ্ট একটি অনন্য নম্বর, যা গবেষণাপত্রটি সহজে খুঁজে পেতে সাহায্য করে।
অনুমতি বা Citation ছাড়া অন্যের গবেষণা বা লেখা ব্যবহার করা। এটি গবেষণার নৈতিকতার পরিপন্থী ও গুরুতর অপরাধ।
গবেষণায় ব্যবহৃত তথ্যের উৎস যথাযথভাবে উল্লেখ করা।
নিজের পূর্ববর্তী গবেষণাকে Citation হিসাবে ব্যবহার করা।
উচ্চমানের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক গবেষণার সূচিকৃত তথ্যভাণ্ডার।
একটি বৃহৎ গবেষণা ডাটাবেস, যা বিভিন্ন উচ্চ-মানের গবেষণাপত্র সংরক্ষণ করে।
কম মানসম্পন্ন বা ভুয়া জার্নাল, যা অর্থের বিনিময়ে গবেষণা প্রকাশ করে কিন্তু সঠিক Peer Review প্রক্রিয়া অনুসরণ করে না।
গবেষণাপত্র প্রকাশের আগে Peer Review ছাড়া উন্মুক্তভাবে শেয়ার করা সংস্করণ।
গবেষণাপত্রের প্রধান যোগাযোগকারী লেখক, যিনি সম্পাদক ও রিভিউয়ারদের সঙ্গে যোগাযোগ করেন।
এই প্রকাশনা মডেলে গবেষণাপত্র বিনামূল্যে পাঠকদের জন্য উন্মুক্ত থাকে।
এ ধরনের গবেষণাপত্র পড়তে অর্থ পরিশোধ করতে হয় বা সদস্যতা নিতে হয়।
রিভিউয়ারদের নাম লেখকদের কাছে প্রকাশ করা হয় না।
এতে লেখক ও রিভিউয়ার পরস্পরের পরিচয় গোপন থাকে।
গবেষণাপত্রের প্রাথমিক সংস্করণ, যা প্রকাশনার জন্য জমা দেওয়া হয়।
একটি জার্নালের নির্দিষ্ট নিয়মাবলি, যা গবেষণাপত্র জমা দেওয়ার সময় অনুসরণ করতে হয়।
যেসব গবেষণায় মানুষ বা প্রাণী অন্তর্ভুক্ত থাকে, সেখানে সংশ্লিষ্ট কমিটি থেকে অনুমোদন নিতে হয়।
গবেষণার ডেটা উন্মুক্তভাবে শেয়ার করা, যাতে অন্য গবেষকরা তা যাচাই বা অনুমতি নিয়ে ব্যবহার করতে পারেন।
একই পদ্ধতি অনুসরণ করে অন্য গবেষকরা একই ফলাফল পেতে সক্ষম হওয়ার সম্ভাবনা।
পিয়ার রিভিউ-পরবর্তী সংস্করণ, যা প্রকাশনার চূড়ান্ত পর্যায়ের আগে তৈরি করা হয়।
গবেষণাপত্রের চূড়ান্ত সংস্করণ, যা জার্নালে প্রকাশিত হয়। এটি হতে পারে প্রিন্ট (Printed) বা অনলাইন (Online)।
গবেষণাপত্র Peer Review প্রক্রিয়া সফলভাবে অতিক্রম করে প্রকাশের জন্য অনুমোদিত হলে তাকে "Accepted" বলে।
গবেষণাপত্র প্রকাশের আগে ভাষাগত ও গঠনগত ত্রুটি সংশোধন করার প্রক্রিয়া।
গুরুতর ত্রুটি, প্লেজিয়ারিজম বা নৈতিক লঙ্ঘনের কারণে একটি প্রকাশিত গবেষণাপত্র বাতিল করা।
গবেষণা ও প্রকাশনার ক্ষেত্রে এসব পরিভাষার সঠিক ব্যবহার ও বোঝাপড়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। গবেষণার গুণগত মান নিশ্চিত করতে গবেষকদের এ বিষয়ে সুস্পষ্ট ধারণা থাকা প্রয়োজন।