ফুলকপি: একটি পরিচিতি
ফুলকপি আমাদের দেশে একটি পুষ্টিকর, সুস্বাদু ও জনপ্রিয় সবজি। দেশে চাষকৃত ফুলকপির জাত অধিকাংশই সংকর জাতের এবং বিদেশ থেকে আমদানিকৃত, যা স্থানীয় আবহাওয়ায় বীজ উৎপাদন করে না।
ফুলকপির জাত
ফুলকপির জাত বারি ফুলকপি -১ (রুপা): গ্রীষ্মমণ্ডলীয় একটি প্রজাতি থেকে বাছাই প্রক্রিয়ার মাধ্যমে এ জাতটি উদ্ভাবন করা হয় এবং ১৯৯৮ সালে অনুমোদন করা হয়। প্রতিটি ফুলকপির ওজন ৮৫০-১০০০ গ্রাম। ফুলকপি চারদিকে পাতা দ্বারা আংশিক ঢাকা থাকে। এদেশের জলবায়ুতে বারি ফুলকপি-১ জাতের বীজ উৎপাদন করা যায়। জীবনকাল ৯৫-১০৫ দিন। উন্নত পদ্ধতিতে চাষ করলে হেক্টরপ্রতি ফলন ২৫-২৮ টন হয়। বীজের ফলন হেক্টরপ্রতি ৪৫৮-৫৫০ কেজি। জাতটি বাংলাদেশের সর্বত্র চাষাবাদের উপযোগী।
ফুলকপির উৎপাদন প্রযুক্তি
বপনের সময়
ভাদ্র-আশ্বিন (মধ্য-আগস্ট থেকে মধ্য-অক্টোবর) মাসে বীজ বপন করতে হয় এবং কার্তিক থেকে অগ্রহায়ণ পর্যন্ত (মধ্য-নভেম্বর থেকে ডিসেম্বর) জমিতে চারা রোপণ করা যায়।
সারের পরিমাণ
ফুলকপি চাষের জন্য মাঝারী উর্বর জমিতে নিম্নরূপ হারে সার প্রয়োগ করতে হবে:
I. ইউরিয়া: ২৫০-৩০০ কেজি
II. টিএসপি: ১৫০-২০০ কেজি
III. এমওপি: ২০০-২৫০ কেজি
IV. গোবর: ১৫-২০ টন
সার প্রয়োগ পদ্ধতি
জমি তৈরির সময় অর্ধেক গোবর, সমুদয় টিএসপি ও অর্ধেক এমওপি সার প্রয়োগ করতে হবে। বাকি অর্ধেক গোবর চারা রোপণের ১ সপ্তাহ পূর্বে মাদায় দিয়ে মিশিয়ে রাখতে হবে। এরপর চারা রোপণ করে সেচ দিতে হয়। ইউরিয়া ও বাকি অর্ধেক এমওপি সার ২ কিস্তিতে প্রয়োগ করতে হবে। চারা লাগানোর ১৫ দিন পর ১ম কিস্তি এবং চারা রোপণের ৩০-৫০ দিন পর বাকি সার ২ কিস্তিতে উপরি প্রয়োগ করতে হবে।
অন্তর্বর্তীকালীন পরিচর্যা
ফসলের নিবিড় যত্ন যেমন- আগাছা দমন, সার প্রয়োগ, পানি সেচ, নিষ্কাশন, আস্তরণ ভেঙে দেওয়া এবং মাটি ঝুরঝুরে রাখা আবশ্যক। ফুলকপির ফুলের রং ধবধবে সাদা রাখার জন্য কপি অবস্থায় চারদিকের পাতা বেঁধে ফুল ঢেকে দিতে হয়। অন্যথায় সূর্যালোকে উন্মোচিত থাকলে ফুলের বর্ণ হলুদাভ হয়ে যায়।