স্বাস্থ্যখাতে ফার্মাসিস্টের অপরিহার্য ভূমিকা

User

শিক্ষার্থী , রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়

শিক্ষার্থী


রেজী:
BCW24120010

প্রকাশিত:
২৫ এপ্রিল ২০২৫

আপডেট:
২৫ এপ্রিল ২০২৫

  

 

 

স্বাস্থ্যখাতে ফার্মাসিস্টের অপরিহার্য ভূমিকা

 

বাংলাদেশে স্বাস্থ্যখাতে ফার্মাসিস্টদের ভূমিকা এখনো অনেকাংশে ওষুধ কোম্পানির মধ্যেই সীমাবদ্ধ। অনেকেই মনে করেন, ফার্মেসি পড়ে ওষুধের দোকান চালানো বা ডাক্তারদের কাছে গিয়ে ওষুধের মার্কেটিং করা ফার্মাসিস্টদের মূল কাজ। কিন্তু বাস্তবে এর পরিধি অনেক বিস্তৃত।

১৯৬৪ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ফার্মেসি বিভাগ চালুর মাধ্যমে এদেশে ফার্মাসিস্টদের যাত্রা শুরু হয়। তবে ১৯৭৬ সালের ফার্মেসি অধ্যাদেশের মাধ্যমে ফার্মাসিস্টদের পেশাগত স্বীকৃতি দেওয়া হয়। এরপর ১৯৮২ সালে ঔষধ নিয়ন্ত্রণ অধ্যাদেশ এবং পরবর্তী সময়ে ২০০৫, ২০১৬ ও ২০২৩ সালের সংশোধনীর মাধ্যমে ফার্মাসিস্টদের ভূমিকার প্রয়োজনীয়তা আরও স্পষ্ট করা হয়।

ফার্মাসিস্টদের কাজের পরিধি

ফার্মাসিস্টদের কাজ শুধুমাত্র ফার্মা কোম্পানির চাকরিতে সীমাবদ্ধ নয়। তাদের কার্যক্রমের মধ্যে রয়েছে:

1. ক্লিনিক্যাল ফার্মাসি ও হাসপাতাল ফার্মাসি:

ডাক্তার প্রদত্ত প্রেসক্রিপশন পুনরায় নিরীক্ষা করা।

রোগীর সামর্থ্য অনুযায়ী ওষুধের ব্র্যান্ড পরিবর্তন করা।

ওষুধের ডোজ তৈরি এবং সম্ভাব্য বিষক্রিয়া যাচাই করা।

 

2. কমিউনিটি ও মডেল ফার্মাসি:

রোগীদের সঠিক ওষুধ সেবন পদ্ধতি সম্পর্কে ধারণা দেওয়া।

ডাক্তারের অনুপস্থিতিতে ওষুধ বিষয়ে প্রাথমিক পরামর্শ দেওয়া।

 

3. গবেষণা ও শিক্ষা:

ওষুধ সম্পর্কিত নতুন গবেষণার উদ্যোগ নেওয়া।

শিক্ষাক্ষেত্রে নতুন প্রজন্মের ফার্মাসিস্ট তৈরি করা।

 

 

স্বাস্থ্যখাতে ফার্মাসিস্টের অভাব

বাংলাদেশের প্রায় ৪৩টি পাবলিক ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রতি বছর হাজারো ফার্মাসিস্ট স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করলেও তাদের বেশিরভাগই ফার্মা কোম্পানিতে সীমাবদ্ধ। অথচ হাসপাতাল, ক্লিনিক ও কমিউনিটিতে ফার্মাসিস্টদের কাজের অনেক সুযোগ রয়েছে।

প্রতিবছর হাজার হাজার রোগী উন্নত চিকিৎসার জন্য দেশের বাইরে চলে যায়। এর অন্যতম কারণ আমাদের দেশের চিকিৎসা ব্যবস্থায় ফার্মাসিস্টদের সঠিকভাবে অন্তর্ভুক্ত না করা। অথচ ফার্মাসিস্ট থাকলে ভুল ওষুধ প্রয়োগের হার অনেকাংশে হ্রাস পায় এবং রোগীর আস্থা বাড়ে।

 

 

সমন্বিত চিকিৎসা সেবা

একজন রোগীর চিকিৎসায় ডাক্তার, নার্স এবং ফার্মাসিস্টের সমন্বয় অপরিহার্য। সঠিক ওষুধ নির্বাচন, ডোজ নির্ধারণ, পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নিরীক্ষা এবং রোগীর জীবনযাত্রা সম্পর্কে দিকনির্দেশনা প্রদান ফার্মাসিস্টদের প্রধান দায়িত্ব।

উপসংহার

ফার্মাসিস্টদের পেশাগত স্বীকৃতি প্রদানের ৪৭ বছর পরও তাদের প্রয়োজনীয়তা যথাযথভাবে স্বীকৃতি পায়নি। দেশের চিকিৎসা ব্যবস্থা আন্তর্জাতিক মানে উন্নীত করতে হাসপাতাল, ক্লিনিক এবং কমিউনিটিতে ফার্মাসিস্ট নিয়োগের বিকল্প নেই। এটি শুধু চিকিৎসা সেবার মান বৃদ্ধি করবে না, বরং রোগীদের বিদেশমুখী হওয়ার প্রবণতাও কমাবে।

~মো: আরিফুল ইসলাম

যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক, ২০২৪-২৫ কার্যবর্ষ

বাংলাদেশ তরুণ কলাম লেখক ফোরাম

শিক্ষার্থী, ফার্মেসি বিভাগ, সেশন: ২০১৮-১৯, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়

মোবাইল: 01795860807

ইমেইল: s1910926146@ru.ac.bd