ভূমিকা
সিলেট বিভাগের অন্যতম ঐতিহাসিক ও সাংস্কৃতিক জেলা হলো হবিগঞ্জ। পাহাড়, নদী, হাওর-বাওর এবং চা বাগানের অপার সৌন্দর্যে ভরপুর এই জেলা কেবল পর্যটন নয়, অর্থনীতিতেও অসামান্য ভূমিকা পালন করে।
হবিগঞ্জের ইতিহাস
সুফি সাধক হযরত শাহজালাল (রঃ) এর সেনাপতি সৈয়দ নাছির উদ্দিন (রঃ) এর স্মৃতি বিজড়িত এই জনপদের নামকরণ হয়েছিল সৈয়দ হবিব উল্লাহর নামানুসারে। ১৮৬৭ সালে এটি মহকুমা হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে এবং ১৯৮৪ সালের ১ মার্চ পূর্ণাঙ্গ জেলা হিসেবে স্বীকৃতি পায়।
ভৌগোলিক পরিচিতি
হবিগঞ্জ জেলার উত্তরে সুনামগঞ্জ ও সিলেট, পূর্বে মৌলভীবাজার, দক্ষিণে ত্রিপুরা রাজ্য এবং পশ্চিমে কিশোরগঞ্জ ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা অবস্থিত। ২৬৩৬.৫৮ বর্গকিলোমিটার আয়তনের এই জেলার জনসংখ্যা প্রায় ২৫ লক্ষ, যেখানে প্রতি বর্গকিলোমিটারে বসবাস করে ৮৯৫ জন।
অর্থনীতি
হবিগঞ্জ জেলার অর্থনীতি চা, গ্যাস এবং শিল্প কারখানার উপর নির্ভরশীল। এখানে রয়েছে রশিদপুর, বিবিয়ানা ও হবিগঞ্জ গ্যাসফিল্ড, যেগুলো থেকে ৫.৫ ট্রিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস উত্তোলনযোগ্য। জেলার শায়েস্তাগঞ্জ ও মাধবপুর উপজেলাগুলো শিল্পায়নের জন্য পরিচিত। এছাড়া জেলার ২৪টি চা বাগান ও ৩টি রাবার বাগান জাতীয় অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।
পর্যটন
হবিগঞ্জ জেলার পর্যটন কেন্দ্রগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো:
সাতছড়ি ও রেমা-কালেঙ্গা জাতীয় উদ্যান
বানিয়াচং গ্রাম, এশিয়ার বৃহত্তম গ্রাম
তেলিয়াপাড়া চা বাগানের মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতিসৌধ
সাগর দীঘি, বিতঙ্গল আখড়া ও উচাইল-শংকরপাশা শাহী মসজিদ
বিখ্যাত ব্যক্তিত্ব
হবিগঞ্জে জন্মগ্রহণ করেছেন ব্রাকের প্রতিষ্ঠাতা স্যার ফজলে হাসান আবেদ, অর্থনীতিবিদ শাহ এম এস কিবরিয়া, এবং কণ্ঠশিল্পী সুবির নন্দীসহ অনেক বরেণ্য ব্যক্তিত্ব।
উপসংহার
ঐতিহাসিক, প্রাকৃতিক এবং অর্থনৈতিক গুরুত্বে ভরপুর হবিগঞ্জ জেলা আমাদের গৌরব ও সম্ভাবনার প্রতীক। এই জেলার সম্পদ ও সৌন্দর্য কেবল বাংলাদেশ নয়, বিশ্ব দরবারেও প্রশংসিত।