পঞ্চগড় জেলা

User

শিক্ষার্থী , Rajshahi University

Honours 4th year


রেজী:
BCW24120005

প্রকাশিত:
২৫ এপ্রিল ২০২৫

আপডেট:
২৫ এপ্রিল ২০২৫

 

 পঞ্চগড় জেলা: এক নজরে


 

পঞ্চগড় জেলা বাংলাদেশের উত্তরের সীমান্তবর্তী অঞ্চল হিসেবে পরিচিত। এটি হিমালয়ের পাদদেশে অবস্থিত এবং প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্যে ভরপুর। পঞ্চগড় জেলা ১৯৮৪ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় এবং এটি রংপুর বিভাগের অন্তর্গত একটি প্রশাসনিক অঞ্চল। জেলা পাঁচটি উপজেলা—তেঁতুলিয়া, পঞ্চগড়, বোদা, দেবীগঞ্জ, এবং আটোয়ারী—এ নিয়ে গঠিত।

পঞ্চগড়ের অন্যতম বৈশিষ্ট্য হলো এর প্রাকৃতিক সৌন্দর্য। এখানকার প্রধান নদীগুলোর মধ্যে করতোয়া, ডাহুক, মহানন্দা, তালমা, পাঙ্গা এবং চাওয়াই উল্লেখযোগ্য। এছাড়া, পঞ্চগড়ের ভৌগলিক অবস্থান এবং শীতের তীব্রতা একে আরো আকর্ষণীয় করে তোলে। হিমালয়ের শৈত্য প্রবাহের কারণে শীতে এখানে তীব্র শীত অনুভূত হয়, যা পর্যটকদের জন্য এক বিশেষ আকর্ষণ।

পঞ্চগড়ের ইতিহাসও সমৃদ্ধ। জেলার সদর উপজেলায় অবস্থিত ভিতরগড় দুর্গ বাংলাদেশের অন্যতম বৃহত্তম দুর্গ, যা প্রায় বার বর্গ মাইল জায়গায় বিস্তৃত। এই দুর্গের প্রাথমিক কাঠামো নির্মিত হয়েছিল আনুমানিক ৬ষ্ঠ শতকে, পৃথু রাজা কর্তৃক। পরবর্তীতে পাল বংশীয় রাজারা এ দুর্গের সম্প্রসারণ করেন। এছাড়া, পঞ্চগড় সদর উপজেলার অমরখানা ইউনিয়নে অবস্থিত মহারাজা দিঘীও বিশেষ উল্লেখযোগ্য। এটি প্রায় ৮০০x৪০০ গজ আয়তনের এবং পানির গভীরতা প্রায় ৪০ ফুট।

এ অঞ্চলের ঐতিহাসিক স্থানগুলির মধ্যে আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ স্থান হলো মহানন্দা নদীর তীরে অবস্থিত তেঁতুলিয়া উপজেলার ঐতিহাসিক ডাক বাংলো। ভিক্টোরিয়ান শৈলীতে নির্মিত এই বাংলো কুচবিহারের রাজা দ্বারা নির্মিত হয়েছিল। এখান থেকে কাঞ্চনজঙ্ঘার সৌন্দর্য দেখা যায়, যা শীতকালে বিশেষভাবে দৃশ্যমান হয় এবং স্থানীয় ও বিদেশী পর্যটকদের আকর্ষণ করে।

পঞ্চগড়ের চা শিল্পও অত্যন্ত পরিচিত। ২০০০ সালে এ অঞ্চলে চা চাষ শুরু হয় এবং বর্তমানে ৩২৭টি প্লটে চা চাষ হয়ে থাকে। এখানকার উৎপাদিত চা ইউরোপ, আমেরিকা এবং মধ্যপ্রাচ্যে রপ্তানি করা হয়। পঞ্চগড় জেলায় চা উৎপাদনের জন্য ৫টি ফ্যাক্টরি চালু রয়েছে, যা বছরে প্রায় ১১,১২,৮৩৪ কেজি চা উৎপাদন করে।

পঞ্চগড়ের আরেকটি বিশেষ স্থান হলো তেঁতুলিয়া উপজেলার বাংলাবান্ধা স্থলবন্দর, যা ১৯৯৭ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। এই বন্দর ভারত এবং নেপালের সঙ্গে বাণিজ্যিক সম্পর্ক বজায় রাখে।

এছাড়া, পঞ্চগড় জেলার পাথর উত্তোলনও একটি গুরুত্বপূর্ণ অর্থনৈতিক কার্যক্রম। এখানে ৮টি নদী থেকে ১৯টি পাথর মহাল থেকে পাথর উত্তোলন করা হয়, যা স্থানীয়দের জীবিকা নির্বাহে সহায়ক।

পঞ্চগড়ের সমস্ত ঐতিহাসিক, প্রাকৃতিক ও সাংস্কৃতিক বৈশিষ্ট্যই এটি একটি অন্যতম পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছে।