এথেন্সকে গনতন্ত্রের সূতিকাগার বলা হয় এটা আমরা সবাই কম বেশি জানি বা শুনেছি।চলুন এথেন্স সম্পর্কে এবার কিছু অজানা তথ্য জানা যাক। এথেন্স বিশ্বের সবচেয়ে প্রাচীন শহর এবং গ্রিসের রাজধানী।এটি অ্যাটিকা অঞ্চলের সবচেয়ে প্রভাবশালী শহর।শহরটির নামকরণ করা হয়েছিল প্রাচীন গ্রীক প্রজ্ঞার দেবী এথেনার (জিউসের কন্যা) নামে।এথেন্স ছিল প্রাচীন গ্রীসের অন্যতম শক্তিশালী নগর-রাষ্ট্র।মূলত এথেন্স ছিল গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র।এথেন্সে রাষ্ট্র পরিচালনায় তখন দুইটি সংসদ ছিল।গোত্র প্রধানদের নিয়ে গড়া সংসদকে বলা হত 'এরিওপেগাস' এবং সাধারণ নাগরিকদের সমিতিকে বলা হত 'একলেসিয়া'। এথেন্সে চূড়ান্তভাবে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেন পেরিক্লিস।পেরিক্লিস এথেন্সের ক্ষমতায় আসেন ৪৬০ খ্রিষ্টপূর্বাব্দে।স্পার্টা ও এথেন্স উভয় দেশ একে অন্যের শত্রু ছিল।এথেন্স তার বন্ধু রাষ্ট্রগুলোকে নিয়ে একটি জোট গঠন করে।এর নাম হয় 'ডেলিয়ান লীগ'। অন্যদিকে স্পার্টা তাঁর বন্ধু রাষ্ট্রগুলোকে নিয়ে গঠন করে আরেকটি জোট।এ জোটের নাম হয় 'পেলোপনেসীয় লীগ'।এক সময় এই দুই জোটের মধ্য যুদ্ধ বেঁধে যায়।ইতিহাসে এ যুদ্ধ 'পেলোপনেসীয় যুদ্ধ'(৪৩১-৪০৪ খ্রিস্টপূর্ব ) নামে পরিচিত।৪৬০ - ৪০৪ খ্রিষ্টপূর্বাব্দ পর্যন্ত মোট ৩ বার যুদ্ধ হয়।এ যুদ্ধে চূড়ান্ত পতন ঘটে এথেন্সের।৩৬৯ খ্রিষ্টপূর্বাব্দে এথেন্স চলে আসে স্পার্টার অধীনে।এরপর নগররাষ্ট্র থিবস দখল করে নেয় এথেন্স। ৩৩৮ অবস্থিত-খ্রিষ্টপূর্বাব্দে ম্যাসিডনের রাজা ফিলিপস থিবস অধিকার করে নেয়।খ্রিষ্টপূর্ব ৩৩৬ অব্দে দ্বিতীয় ফিলিপসের মৃত্যু হলে তার ছেলে আলেকজান্ডার ম্যাসিডনের সিংহাসনে আরোহণ করেন।১৮৩৪ সালে স্বাধীন গ্রিসের রাজধানী হিসেবে এথেন্স মানুষের মধ্যে পরিচিত হয়ে ওঠে।খ্রিষ্টপূর্ব ৫ম শতাব্দীকে এথেন্সের স্বর্ণযুগ বলা হয়।প্রাচীন গ্রীক দর্শন শাস্ত্রীয় এথেন্সে সমৃদ্ধ হয়েছি।সক্রেটিস, প্লেটো, অ্যারিস্টটল, এপিকিউরাস এবং স্পিউসিপ্পাস হলেন কয়েকজন মহান দার্শনিক এবং চিন্তাবিদদের নাম যারা এই শহরে বসবাস করেছিলেন এবং তাদের তত্ত্ব এবং ধারণাগুলি প্রণয়ন করেছিলেন,যার মধ্যে কিছু এখনও আধুনিক দিনে প্রভাবশালী।প্রাচীন বিশ্বের দর্শন ও বিজ্ঞানের দুটি সবচেয়ে বিশিষ্ট স্কুল এথেন্সে অবস্থিত ছিল 'একাডেমি' এবং 'লাইসিয়াম',প্রাচীন বিশ্বের দর্শন ও বিজ্ঞানের দুটি সবচেয়ে বিশিষ্ট স্কুল,যথাক্রমে প্লেটো এবং অ্যারিস্টটল দ্বারা প্রতিষ্ঠিত,এথেন্স শহরে অবস্থিত।আধুনিক পশ্চিমা সংস্কৃতির বেশিরভাগই প্রাচীন এথেন্সে এর শিকড় রয়েছে হেরোডস অ্যাটিকাস শিল্পকলা,দর্শন,বিজ্ঞান,স্থাপত্য এবং শহরের রাজনৈতিক ব্যবস্থা সবই পশ্চিমা বিশ্বকে গভীরভাবে প্রভাবিত করেছে।এই কারণেই এথেন্সকে 'পশ্চিমী সভ্যতার দোলনা' বলা হয়।ম্যারাথন দৌড়ের উৎপত্তি এথেন্সে।গৌরবময় ইতিহাসের উত্তরাধিকার,এথেন্স আজ ধ্রুপদী ধ্বংসাবশেষ,মনোরম প্রাকৃতিক সৌন্দর্য এবং প্রাণবন্ত সংস্কৃতিতে রঙিন একটি আধুনিক মহাজাগতিক হিসাবে দাঁড়িয়ে আছে। [তথ্যসূত্র:গুগল,ইউটিউব,MP3 সাধারণ জ্ঞান (২য় খন্ড) আন্তর্জাতিক]