ওহ, আমার প্রিয়!
আমার শৈশবের খেলার সাথী, আমার বন্ধু, আমার উত্তম শুভাকাঙ্ক্ষী।
আমার না বলা কথাগুলো শোনার জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষমাণ প্রেয়সী তুমি...
কতদিন তোমার সাথে সরাসরি দেখা হয় না, কতদিন তুমি আমার কথা শোনো না।
তুমি কি সেটা বুঝতে পারছ? নাকি বুঝেও না বোঝার ভান করছ?
আমি তো তোমায় কখনো ভুলিনি...
আমি সবসময় তোমার কথা ভাবি, তোমার সাথে কথা বলি।
এটা আরও গভীর হয়, আরও বাস্তব মনে হয় যখন কেউ একজন আমার কাছ থেকে দূরে সরে যায়।
তখন তোমার প্রতি আমার স্মৃতি যেন আরও প্রবল হয়ে ওঠে।
যখন আমি ব্যথায় কুঁকড়ে উঠি,
যখন আমার মাথায় কেউ হাত বুলিয়ে আদর করে না,
কেউ আমার খোঁজও নেয় না—
তখন আমার চোখে পানি আসে তোমার কথা ভেবে।
একটা দিন, একটা মুহূর্তও নেই তোমার স্মৃতি ছাড়া।
তুমি আমাকে ছেড়ে চলে গিয়েছ আল্লাহ্র কাছে,
তোমার স্বামীর কাছে, সন্তানদের কাছে।
শুধু রেখে গিয়েছ আমাকে...
তবুও, তুমি যেন সবসময় আমার সাথেই আছো।
আমি টের পাই, প্রতি রাতে তুমি আমার পাশে,
আমাকে ঘুম পাড়িয়ে দাও,
আমার নাম ধরে ডাকো—"সাথী মুনি",
নানুর কথা ভেবে খিলখিলিয়ে হাসো।
তোমার স্পর্শে আজও লুকিয়ে আছে হাজারো স্মৃতি,
না বলা কথাগুলো, নিঃশব্দ অনুভব।
তুমি আমার স্বপ্নে এসে সাবধান করো,
ভালোবাসো, রাগ করো, আর মায়া দিয়ে জড়িয়ে রাখো।
তোমার বড় বড় চোখে রাগের অভিব্যক্তি আজও আমার চোখে ভাসে।
তুমি তো সবাইকে নয়, শুধু আমার কথাই শুনতে।
তোমার শেষের দিনগুলোতেও আমি ছিলাম তোমার সবচেয়ে আপন।
তবুও, আমি কেন যেন উদাসীন ছিলাম...
তুমি বলো, আমি কি সত্যিই উদাসীন ছিলাম?
হ্যাঁ, হয়তো তাই।
না হলে তো এখনো তুমি যে স্বপ্ন দেখেছিলে—
তোমার সাথেই হাঁটতে হাঁটতে আমি ডাক্তার হতাম,
তোমার অনুপ্রেরণা বাস্তব করে তুলতাম।
তুমি আমার প্রথম শিক্ষিকা,
তুমি আমার আনন্দের কারণ,
তুমি আমার জীবনের সাহস...
ঈদের দিনগুলো তোমার স্মৃতিকে আরো গভীর করে তোলে।
তুমি কয়েক হাত দূরেই থেকেও এখন অনেক অনেক দূরে...
যেখানেই থেকো, ভালো থেকো, শান্তিতে থেকো,
আমার নানী।
ইতি,
তোমার আদরের নাতনি
সাথী মুনি (মানতাসা)